Tuesday, November 17, 2009

blog rating/ban

ISSUES ABOUT BLOG BAN:

বাংলা ব্লগ এখনও তার শৈশব কাটায় নি। আমাদের ব্লগারদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। তিন বছর আগের সেই ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম এবং আজকের ব্লগিং প্লাটফর্মের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল দূরত্ব। এবং সেটাই নির্দেশ করছে বাংলা ব্লগিং এর সাফল্য।

বাংলা ব্লগকে সাধারন বাংগালীর কাছে জনপ্রিয় করতে যে প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দিতেই হয়, তা হল সামহোয়ার ইন। ব্লগিং প্লাটফর্মের সমস্ত সীমাবদ্ধতাকে ধীরে ধীরে জয় করে সামহোয়ার এখন মোটামুটি স্থায়ীত্ব লাভ করেছে। এছাড়াও প্রথম আলো ব্লগ ও আমার ব্লগও মোটামুটি মানের জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে ব্লগ জগতকে একটি বিকল্প মিডিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে আরো বহু সময় দিতে হবে। কিছুদিন আগে আমি আমার একটি লেখায় ব্লগের এই প্রাথমিক সাফল্যকে স্বীকৃতি জানিয়ে লিখেছিলাম:

"তবে আশার কথা এই যে প্লাটফর্মের সংখ্যা বাড়ছে। চাইলেও কারো কন্ঠরোধ করা আর সম্ভবপর হবে না। ইন্টারনেট এক বিশাল সমুদ্র। সেখানে "যে লড়ে সে টেকে" বা "survival of the fittest" মতবাদের সার্থক রূপ প্রতিফলিত হয়। আর এই "লড়া"টা হতে হবে বুদ্ধিভিত্তিক, নোংরামি ভিত্তিক নয়। প্লাটফর্মের সংখ্যা বেড়ে গেল আপনা আপনিই বুদ্ধি ভিত্তিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরী হবে, নোংরামী দিয়ে তা বন্ধ করা যাবে না।"


ব্লগিং এর একটি চ্যালেন্জ্ঞ হচ্ছে ব্যান। ব্লগ একটি হালকা মেজাজের প্লাটফর্ম বিধায় এখানে অনেক সময় অনেকেই অনেক কথাবার্তা লিখে থাকেন। যার ফলে শুধু অস্থির মেজাজের নয়, বরং অনেক ভাল ভাল ব্লগারদের উপরেও ব্যানের তলোয়ার নেমে এসেছে। ব্লগের মূল প্রান হল তার ব্লগাররা। ডিসিপ্লিনারী একশনের তোড়ে যদি ব্লগাররাই ব্লগিং এর পরিবেশ না পায়, তাহলে ব্লগ আর জেলখানার মধ্যে কোন তফাৎ থাকে না। ব্লগিং এর ডিসিপ্লিনারী একশন হিসেবে ব্যান তাই খুব পছন্দনীয় কোন ডিসিপ্লিনারী একশন নয়। তা সত্ত্বেও "ব্যান" এখনও ব্লগিং প্লাটফর্মগুলোর মূল ডিসিপ্লিনারী একশন। কিছু দিন আগে প্রথম আলো ব্লগে ম্যাভেরিক ভাই ব্যান পরবর্তী উল্লাস জাতীয় কথাবার্তা নিরুৎসাহিত করতে অনুরোধ জানিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। কথা হচ্ছে, যাকে ব্যান করা হয়েছে সে কোন ভাবেই আর আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারছে না। যে ব্যান হয়, সে অনেকের কাছে অপ্রিয়, তবে কারো কারো কাছে সে প্রিয়। তাই, এ জাতীয় উল্লাস সূচক কথাবার্তা স্বভাবতই অনেককে আহত করে থাকে। সুতরাং এ বিষয়টির দিকে ব্লগ কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া জরূরী।

দ্বিতীয় ইস্যুটি হল "স্থায়ী ব্যান" কিংবা "লগ ইন" ব্যান। ক্রমাগত ব্লগ রুল ভংগ করা, কিংবা নিশ্চিত ভাবে ব্লগ পরিবেশকে বার বার উস্কানীর চেষ্টা ব্যতীরেকে কারো উপর এ ধরনের চূড়ান্ত শাস্তি না প্রয়োগ করাই ভাল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও দেখা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে সেরকম কোন অভিযোগ নেই, তাদের বিরুদ্ধেও এরকম শাস্তির খাড়া নেমে এসেছে। এই বিষয়টির নিয়েও কর্তৃপক্ষ নজর দেবেন আশা করি। এটি একজন "ভিকটিম" ব্লগার শুধু নয়, বরং পুরো ব্লগ কমিউনিটিকে এক ধরনের অনিশ্চয়তায় ফেলে দেয়। ব্লগ রুল ভংগ করা যে ব্লগারের স্বভাব কৌশল নয়, তার ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে "চূড়ান্ত ব্যান" কাম্য নয়। প্রতিপক্ষ ব্লগাররা হয়ত এতে সাময়িক আনন্দ লাভ করতে পারে, তবে এর প্রতিক্রিয়া সুদূর প্রসারী। যার ফলশ্রূতিতে ব্লগিং প্লাটফর্মগুলো এখনও তাদের পুরোনো ব্লগারদের ধরে রাখতে ব্যর্থ। এই ব্যর্থতা ব্লগিং প্লাটফর্মের ব্যর্থতা, যার মুখোমুখি হওয়া জরূরী।

শেষ কথা হল, ব্লগারের লেখার ক্ষমতা, তার ব্লগ বয়স - এগুলোও ব্যানের ক্ষেত্রে বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। তিন বছরের পুরোনো ব্লগার যে ইতিমধ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, আর তিন দিনের ব্লগার যে এখনও প্রতিষ্ঠিত হয় নি -ব্লগ নীতিমালা দুজনের ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযুক্ত হওয়া অন্তত আমি সমর্থন করতে পারছি না। পুরোনো ব্লগারদের স্বীকৃতি দিয়ে তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা কাম্য। তেমনি ভাবে, যেসব ব্লগারের লেখা সার্বিকভাবে সবার গ্রহনযোগ্যতা পায়, তাদের ক্ষেত্রেও কিছুটা শিথিলতা দেয়া হোক।

(আমার এই লেখাটি সামহোয়ারে সদ্য ব্যান হওয়া নাহিদকে উৎসর্গ করে। তার ব্যানই আমাকে এ লেখাটি লিখতে উৎসাহী করেছে। তার আনব্যানের বিষয়টি সম্পূর্নভাবে কর্তৃপক্ষের বিবেচনার বিষয়, তবে তাকে "আনব্যান" দেখলে আমি খুশী হই।)

হ্যাপি ব্লগিং।











ISSUES ABOUT BLOG RATING:
সামহোয়ার ব্লগে মাইনাস রেটিং এর জন্য নূতন নিয়ম হয়েছে। কেউ ব্লকড হলে সে আর ব্লককারী ব্লগারের পোস্টে মাইনাস রেটিং করতে পারবে না।

আমি এই নিয়ম টেস্ট করতে গিয়ে একজনের ব্লগের একটি পোস্টে মাইনাস দিলাম (যার ব্লগে আমি ব্লকড বলে জানতাম)। অপেক্ষা করছি কি হয় সেটা দেখার জন্য। দেখি মাইনাস রেটিং কাজ করল। বিষয় কি? উল্টো হলো কেন? দেখলাম তার ব্লগে আমি আর এখন ব্লকড নেই - আনব্লক হয়ে গেছি। ধূর ছাই, অহেতুক মাইনাসটা পড়ল। যাহোক, আরেকজনের ব্লগে গিয়ে অবশ্য নিয়মটা ভেরিফাই করে আসলাম। তার ব্লগে এখনও আমি ব্লকড বলে মাইনাসের নিয়মটা টেস্ট করা গেল।


ব্লগার ফকির ইলিয়াস বলেছেন মাইনাসের এই নিয়মটির প্রস্তাব তিনি করেছিলান।

Click This Link

ফকির ইলিয়াসের জন্য যদি মাইনাসের এই নিয়ম চালু হয়ে থাকে তবে সেটা খুব একটা বড় অন্যায় নয়। কারন উনার এমন অনেক লেখায় মাইনাসের পাহাড় পড়ে যে সেটা খুব জঘন্য লাগে, নিজের কাছেই বিব্রত লাগে।

তবে এই নিয়মটির প্রস এন্ড কনস দুটো দিকই আছে।

প্রথমেই বলে রাখি আমি একজন মাইনাস খাওয়া ব্লগার। আমার পোস্টে মাইনাসের আধিক্য। কিন্তু সেটা আমি কি করে যেন ইগনোর করতে পেরেছি। আমার একটি পোস্টে আমি বিডিআর বিদ্রোহে সরকারের ঢালাও সাধারন ক্ষমার বিরোধিতা করেছিলাম। ব্যপক মাইনাস পড়ে সে পোস্টে। পরে দেখা গেল সরকার নিজেই পিছু হঠেছে সাধারন ক্ষমা থেকে। আবেগ দিয়ে যে দেশ চালানো যায় না, সেটা সরকার দেরীতে হলেও বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু আমি তখন ঠিক একই কথা বলায় আম ব্লগাররা তা পছন্দ করে নি। গনহারে মাইনাস সহ্য করতে হয়।


সামহোয়ারে মাইনাসের ব্যপক অপপ্রয়োগের অন্যতম সফল একটি দৃষ্টান্ত হল মাহবুব মোর্শেদের উপর কিছু ব্লগারদের প্রতিশোধ নেয়া। এই মাইনাস অস্ত্র উনার উপর সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়। উনি কাবু হন এই অস্ত্রে।

নূতন নিয়মে এসব পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা যাবে সম্ভবত। ভুয়া নিকের অধিকারী হয়ে যাকে অপছন্দ করি তাকে মাইনাসের আধিক্য দিয়ে অপদস্ত করতে চাওয়ার চলে আসা বিষয়টা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রিত হবে।

কিন্তু অপর পিঠও তো রয়েছে।

মাইনাস কি লেখককে কিছুই দেয় নি।

পোস্ট ভাল কি মন্দ তা বোঝা যায় মাইনাস রেটিং দিয়ে।

মানুষের সেন্টিমেন্ট কোনদিকে সেটা বোঝার একটি দিক নিদের্শনা হল মাইনাস/প্লাস রেটিং।

সাধারনের মাঝে ব্লগারের গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু সেটাও বোঝা যায় মাইনাস থেকে। অতিশয় খারাপ পোস্টও কোন প্রিয় ব্লগারের কাছ থেকে এলে আমরা মাইনাস দিতে কষ্ট পাই। আর অপ্রিয় ব্লগারের পোস্টে ছুতো খুজি মাইনাস দেবার।

এই তিনটি কারনের দ্বারাই একজন ব্লগার মাইনাস রেটিং পেয়ে থাকে। তাই মাইনাস একটি বড় শক্তিশালী ইনফরমেশন।

যেমন, আমার ব্লগে ইদানিং মাইনাস খুব বেশী আর দেখছি না। এর মানে ধরে নিচ্ছি, মানুষ এখন আর আমাকে ততটা অবিশ্বাস করছে না। আস্তে আস্তে আমার উপর মানুষের বিরক্তি কমে আসছে।

অথচ এই ইনফরমেশনটা সামনে থেকে জানতে হলে আমাকে এখন সবাইকে আনব্লক করতে হবে। কিন্তু গালিবাজ, আর ফ্লাডিং এর রিস্ক তাতে পুরোপুরি থেকে যায়।

সবশেষে:
ফকির ইলিয়াস তার পোস্টে বলেছেন:

"আমার বিশ্বাস প্রকৃত লেখক-লেখিকারা এই সংযোজনে মুক্তির নিঃশ্বাস
নিচ্ছেন।"

আমার কিন্তু বরং মনে হচ্ছে আমি অনেক কিছু হারালাম (উল্লেখ্য আমি নিজেকে প্রকৃত লেখিকার কাতারে ফেলে থাকি)। আগে মাইনাসের জন্য হলেও গালিবাজ ব্লগাররা (যাদের ব্লক করে রেখেছি) আমার পোস্ট পড়ত। এখন সে দায়টা তাদের আর নেই।

নিঃশ্বাস ফেললাম, তবে তা আক্ষেপের।



বি: দ্র: এই পোস্টটি লেখার পর বুঝলাম নিয়মটি শুধু মাইনাস নয়, বরং প্লাসের জন্যও প্রযোজ্য। ব্লগের কিছু পোস্ট পড়ে আমার মনে হয়েছিল, এটা বুঝি শুধু মাইনাসের জন্য প্রযোজ্য।

স্যরি ফর দ্য মিসটেক।

No comments: